Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
আগামী 17 মার্চ ২০১৬ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৯৭তম জন্ম বার্ষিক পালিত হবে ডুমুরিয়া উপজেলায়..............
বিস্তারিত

 

আজ জাতির জনকের ৯৭তম জন্মজয়ন্তী।

 

ডুমুরিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৯৬তম জন্ম দিবস পালিত

 

     ডুমুরিয়া উপজেলায় আগামী ১৭/০৪/২০১৬ইং তারিখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৯৬তম জন্মবার্ষিক পালিত হবে। উক্ত জন্ম দিবস উপলক্ষে  ডুমুরিয়া উপজেলার শহীদ জোবায়েদ আলী মিলনায়তনে ব্যাপক কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। তন্মধ্যে শিশু শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত চিত্রাংকন, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দিন শেষে সন্ধ্যার পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। উক্ত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জনাব বাবু নারায়ন চন্দ্র চন্দ, প্রতিমন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জনাব খান আলী মুনসুর, উপজেলার চেয়ারম্যান, ডুমুরিয়া উপজেলা, জনাব মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রমুখ।

আজ জাতির জনকের ৯৫তম জন্মজয়ন্তী। সমগ্র জাতি আজ কৃতজ্ঞচিত্তে জাতির জনকের শুভ পুণ্য জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছে। বঙ্গবন্ধু তার জীবনব্যাপী একটিই সাধনা করেছেন। আর তা হচ্ছে, বাংলা ও বাঙালির মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। তার এই সাধনার শুরু ১৯৪৮ থেকে। '৪৭-এ দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, এই রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যে আমরা বাঙালিরা নির্যাতিত-নিষ্পেষিত হবো। তাই '৪৮-এর জানুয়ারির ৪ তারিখে গঠন করেছিলেন ছাত্রলীগ এবং '৪৯-এর জুনের ২৩ তারিখে আওয়ামী লীগ এবং সেই থেকে ধাপে ধাপে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমরা আজ বিস্মৃত হয়েছি ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্ব '৪৮-এর মার্চের ১১ তারিখটি। '৫২-এর পূর্বে '৪৮-এর মার্চ মাসের ১১ তারিখটি ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হতো। আর এই পর্বের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু।

মনে পড়ে '৭৩-এর ১৭ মার্চের কথা। সেদিন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ৫৪তম জন্মদিবসে জিল্লুুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রবীণ নেতা শ্রদ্ধাভাজন জননেতা কমরেড মণি সিংহ তার স্মৃতিচারণে বলেছিলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫১ সালে কারাগারে থাকাকালেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন।' চিঠিপত্র আদান-প্রদানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এই পরিকল্পনার কথা অবগত হয়েছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেছিলেন, 'যদিও আমাদের মতপার্থক্য ছিল তথাপি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের কাছে এটা জানতে চেয়ে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন যে, স্বাধীনতা সংগ্রামকে আমরা সমর্থন করব কি-না' এবং সেই সভায় তিনি অকপটে স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি তখন ধারণাটির বিরোধিতা করেছিলেন এবং ভেবেছিলেন যে, স্বাধীনতার জন্য সমগ্র জনগণ মানসিকভাবে প্রস্তুত নয় এবং এ ধরনের উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত সফল হবে না। সেদিন মহান মুক্তি-সংগ্রামের অন্যতম নেতা কমরেড মণি সিংহ আরও বলেছিলেন, 'আমি বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ জীবন কামনা করি। কোনো জনতা তাদের নেতা নির্বাচনে ভুল করে না। বাংলাদেশের জনগণও তার পশ্চাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং তাকে মুক্তিদাতা হিসেবে গ্রহণ করেছে।' প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত সবাই একবাক্যে এ কথার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করবেন। কেননা, বঙ্গবন্ধু তার জীবনের প্রতিটি ধাপেই বাঙালির সার্বিক মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। তিনি তো সবসময় বলতেন, এমনকি দু'দুবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি বলেছেন, 'ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।' যে বাংলার স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, যে বাংলার জন্য তিনি যৌবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন; ফাঁসির মঞ্চে গেয়েছেন বাঙালির জয়গান, সেই বাংলা ও বাঙালির জন্য তার ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। সমুদ্র বা মহাসমুদ্রের গভীরতা পরিমাপ করা সম্ভব; কিন্তু বাংলা ও বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের যে দরদ, যে ভালোবাসা; তার গভীরতা অপরিমেয়।

বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কত কথা কত স্মৃতি আজ মনের চারপাশে ভিড় করে! এমন মহামানবের সানি্নধ্য কেঁদেও আর পাব না কোনোদিন_ এমনটা ভাবলেই চোখ ভিজে যায়। '৭১-এর রক্তঝরা মার্চের ১৭ তারিখের কথা। দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন চলছে তখন। সেদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিন। ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা শেষে দুপুরে ধানমণ্ডির বাসভবনে বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাকালে একজন সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন_ 'আপনার ৫২তম জন্মদিনে আপনার সবচাইতে বড় ও পবিত্র কামনা কী? উত্তরে বঞ্চিত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বভাবসিদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, 'জনগণের সার্বিক মুক্তি।' এর পর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকালে তিনি ব্যথাভারাতুর কণ্ঠে বেদনার্ত স্বরে বলেছিলেন, 'আমি জন্মদিন পালন করি না_আমার জন্মদিনে মোমের বাতি জ্বালি না, কেকও কাটি না। এদেশে মানুষের নিরাপত্তা নাই। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে। আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কি, আর মৃত্যুদিনই কি? আমার জনগণের জন্য আমার জীবন ও মৃত্যু।'

কত বিশাল হৃদয়ের মহৎ মনের অধিকারী মানুষ ছিলেন তিনি! নিজের সবকিছুই তিনি জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। অতি সাধারণ জীবন ছিল তার। রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়েও সরকারি বাসভবনে থাকতেন না। নিরাভরণ, ছিমছাম আর আটপৌরে ৩২ নম্বরের বাড়িটিতেই আমৃত্যু থেকেছেন। ধানমণ্ডিতে যখন প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় তখন ভালো একটি প্লট নেওয়ার জন্য সবার শত অনুরোধ সত্ত্বেও বলেছিলেন, 'আগে সবাইকে দাও। তারপর যদি থাকে তখন দেখা যাবে।'

'৭১-এর জানুয়ারির ৩ তারিখের কথা। ঐতিহাসিক রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে '৭০-এর নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। শপথ গ্রহণ করাবেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। সেদিন বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, '৬ দফা ও ১১ দফা আজ আমার নয়, আমার দলেরও নয়। এ আজ বাংলার জনগণের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। কেউ যদি এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে বাংলার মানুষ তাকে জ্যান্ত সমাধিস্থ করবে। এমনকি আমি যদি করি, আমাকেও।' জনগণের জন্যই ছিল তার রাজনীতি ও কর্মসূচি। তিনি তার বক্তৃতায় সেদিন আরও বলেছিলেন, 'আমাকে মোনয়েম খান কাবু করতে পারেনি, এমনকি আইয়ুব খানও পারেনি_ কিন্তু আমাকে দুর্বল করে দিয়েছে আপনাদের এই অকুণ্ঠ ভালোবাসা। আপনারা দোয়া করবেন যেন আপনাদের এই ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারি।' বাংলার মানুষের প্রতি ভালোবাসার মর্যাদা তিনি রক্ত দিয়ে পরিশোধ করে গেছেন। কবিগুরুর ভাষায়, 'আমৃত্যু দুঃখের তপস্যা এ জীবন, সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে, মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ করে দিতে।'

'৭৫-এর জানুয়ারির ১১ তারিখের কথা আমার স্মৃতির মণিকোঠায় এখনও জ্বলজ্বল করে। হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসে দীর্ঘশ্বাস। এদিন বাংলাদেশ সামরিক একাডেমিতে প্রথম শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে বিদায়ী ক্যাডেটদের উদ্দেশে এক মর্মস্পর্শী বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, '...আমি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একথা বলছি না, তোমাদের জাতির পিতা হিসাবে আদেশ দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী অনেক হবেন, অনেক আসবেন, প্রেসিডেন্টও অনেক হবেন, অনেক আসবেন। কিন্তু জাতির পিতা একবারই হন, দু'বার হন না। জাতির পিতা হিসাবেই যে আমি তোমাদের ভালোবাসি, তা তোমরা জানো। আমি তোমাদের আবার বলছি, তোমরা সৎ পথে থাকবে, মাতৃভূমিকে ভালোবাসবে। মনে রেখো, তোমাদের মধ্যে যেন পাকিস্তানি মনোভাব না আসে। তোমরা পাকিস্তানের সৈনিক নও, বাংলাদেশের সৈনিক। তোমরা হবে আমাদের জনগণের বাহিনী।'

দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্বৈরতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে জাতির জনক যে শিক্ষা অর্জন করেছিলেন, সেই চেতনায় স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে তিনি 'জনগণের বাহিনী' বলে উল্লেখ করেছিলেন। বক্তৃতায় তিনি বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর অভিপ্রায় ব্যক্ত করে, সেনা সদস্যদের আদর্শবান হওয়ার, সৎ পথে থাকার অঙ্গীকার করে দৃঢ়তার সঙ্গে স্নেহার্দ্র কণ্ঠে কবি জীবনানন্দ দাশের জননী কবি কুসুমকুমারী দাশের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করেছিলেন_ 'মুখে হাসি বুকে বল তেজে ভরা মন, মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন।'

অতুলনীয় সংগঠক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। দলীয় নেতাকর্মী প্রত্যেককে দেখতেন নিজ পরিবারের সদস্যের মতো। প্রতিটি নেতাকর্মীর বিপদ-আপদে তিনি তাদের পাশে দাঁড়াতেন পরম হিতৈষীর মতো। মমতা মাখানো সাংগঠনিক প্রয়াস নিয়ে কর্মীদের হৃদয় জয় করে নেওয়ার ব্যতিক্রমী এক ক্ষমতা ছিল তার। '৭২-এর ১৪ এপ্রিল, আমি তখন গ্যাস্ট্রিক-আলসারে আক্রান্ত হয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমার পাকস্থলীতে নালি-ঘায়ের অপারেশন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আমাকে দেখতে এসেছেন। সস্নেহে আমার হাত ধরে, পরম মমতায় কপালে হাত বুলিয়ে আদর করে আমার খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন। আমার একমাত্র কন্যা মুন্নী যখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে তখন টিভিতে ওর অনুষ্ঠান দেখে ওকে স্নেহাশিস জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম ভালোবাসা ছিল শিশুদের প্রতি। তিনি ছবি তুলতে ভালোবাসতেন। ফটোগ্রাফার অনেকেই প্রশ্ন করতেন_ 'লিডার, আপনি এত ছবি তোলেন কেন?' বলতেন, 'ভবিষ্যতের মানুষ যারা। ওরা বড় হয়ে দেখবে কেমন ছিল ওদের নেতা।'

বঙ্গবন্ধু যখন গণভবনে যেতেন, সামনে-পেছনে দুটি গাড়ি থাকত। রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল পড়লে আমাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ত। তখন এ রকম স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতি ছিল না। একদিনের কথা খুব মনে পড়ে। একবার আমাদের গাড়ি সিগন্যালে দাঁড়ানো। হঠাৎ একটি শিশু কত বয়স হবে সাত কি আট; গাড়ির কাছে এসে বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ করে বলছে, 'স্লামুআলাইকুম, মুজিব সাহেব!' তৎক্ষণাৎ বঙ্গবন্ধু শিশুটির হাত ধরে আদর করলেন, ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। আমি পাশে বসে দেখছি একজন রাষ্ট্রনায়কের, জাতির জনকের কী অপার ভালোবাসা শিশুদের প্রতি, কী অপূর্ব মমত্ববোধ। আজ মনে হয়, 'এখন এসব স্বপ্নকথা, দূরের শোনা গল্প; তখন সত্যি মানুষ ছিলাম, এখন আছি অল্প।'

বঙ্গবন্ধুর একান্ত সানি্নধ্যে থেকে দেখেছি তার কৃতজ্ঞতাবোধ, বিনয়; মানুষের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা। আকাশের মতো উদার ছিল তার হৃদয়। জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন তিনি। স্বদেশ কিংবা বিদেশে সমসাময়িক নেতা বা রাষ্ট্রনায়কদের তার তেজোময় ব্যক্তিত্বের ছটায় সম্মোহিত করার, উদ্দীপ্ত করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল বঙ্গবন্ধুর। বীরত্ব, সাহস ও তেজস্বিতার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে তিনি ছিলেন ভাস্বর। তার কাছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল ন্যায়সঙ্গত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব হিসেবে তার একটা তহবিল থাকত আমার কাছে। এই তহবিল থেকে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন জনকে সাহায্য-সহায়তা করতেন। এর মধ্যে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও বিরোধী দলের প্রতিপক্ষীয় লোকজনও ছিলেন। কিন্তু শর্ত ছিল_ যাদেরকে অর্থ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে তাদের নাম-ঠিকানা গোপন রাখতে হবে; প্রকাশ করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু কখনোই মানুষের মনে আঘাত দিয়ে কথা বলতেন না। তার রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল মার্জিত। কখনোই রাজনৈতিক বক্তব্যে ব্যক্তিগত বিষয়কে প্রাধান্য দিতেন না। বঙ্গবন্ধুর সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা ছিল অসাধারণ। সময়ের এক চুল হেরফের হতো না। ঘড়ি ধরে অনুষ্ঠানাদিতে যেতেন।

দলের নেতাকর্মী সবার প্রতি ছিল গভীর মমত্ববোধ। তাদের কাজের মর্যাদা দিতেন, ভালোবেসে বুকে টেনে নিতেন। প্রচণ্ড রেগে গেলেও পরমুহূর্তেই শিশুর মতো শান্ত হয়ে যেতেন। অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী বঙ্গবন্ধুর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অপরিসীম। এক মুহূর্তে মানুষকে আপন করে নেওয়ার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা ছিল তার। নীতির প্রশ্নে ছিলেন অটল। '৭৪-এ দলের কাউন্সিলে দলীয় পদ ত্যাগ করে সভাপতির পদটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তদস্থলে আসীন হয়েছিলেন শ্রদ্ধাভাজন জননেতা শহীদ কামারুজ্জামান সাহেব। আবার '৫৭তে করেছিলেন বিপরীত কাজটি। অর্থাৎ মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলীয় পদে বহাল করেছিলেন নিজেকে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিজস্ব অবস্থান কোথায় হওয়া উচিত সেটি যেমন বুঝতেন, তেমনিভাবে কে কোথায় যোগ্যতর আসনে অধিষ্ঠিত হবেন, তাকে সে জায়গাটিতে বসিয়ে দিতে ভুল করতেন না। বজ্রকণ্ঠের অধিকারী বঙ্গবন্ধু ছিলেন অতুলনীয় বাগ্মী। আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল_ বক্তৃতায় বিভিন্ন কবির কবিতা থেকে উদ্ধৃতি চয়ন, যা আমি আগেই উল্লেখ করেছি। যে জন্য তাকে অভিহিত করা হয়েছিল 'রাজনীতির কবি' হিসেবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুণবাচক বৈশিষ্ট্যের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমার পরম সৌভাগ্য হয়েছিল ইতিহাসের এই মহামানবের একান্ত সানি্নধ্যে আসার। আমার জীবন ধন্য। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পরশ পাথরের মতো।

 

মো: আব্দুল কাদের বিশ্বাস

বর্ষসেরা উদ্যোক্তা-২০১৫

ডুমুরিয়া ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি)

ডুমুরিয়া, খুলনা।

স্থান: ডুমুরিয়া মেইন বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত।

ছবি
ডাউনলোড